রবিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

শুক্রবার , আমি , প্রেমিকা , ছবি তোলা আর আমার ইচ্ছা...!

শক্রবারে আমার তেমন কোন কাজ থাকে না । বিশুধবার অফিস শেষ করে একেবারেই নিজের মতো করে রাতটা কাটায় । আড্ডা, সমালোচনা , ভাই বেরাদার মিল্লা গোল হয়ে নেশা করা , মাতাল হয়ে কবিতা পড়া , আমার অতি আদরের বন্ধু আজাদ'কে নেশার কারিগর হিসাবে নোবেল দেওয়া ,  রাষ্ট্রীয় সকল ক্রাইসিসের জন্যে কবি আর রাজনীতিকের পরনের কাপড় আমি এই রাতেই খুলি !
শুক্রবার সকালে ব্রেকফাস্ট সেরে করার মতো তেমন কিছু থাকে না । প্রেমিকা সকাল বেলায় সময় দিতে পছন্দ করে না । রোদ বেশি থাকে । তার ধারণা রোদে বের হলে ত্বক পুড়ে যাবে ! আমি আর ক্যাচাল পারি না ! হুদাই ! এই রোগ প্রায় সকল মাইয়ার আছে ! আমার খুব ইচ্ছা , আমার প্রেমিকাকে সাথে নিয়ে আমি একদিন রোদ রাস্তা টোকাই ফুল পাখি আর ভাসমান মানুষের ছবি তুলবো । প্রেমিকারা সকাল পছন্দ করে না ! দুপুর পছন্দ করে না ! প্রেমিকারা কেবল বিকালেই কামুক হয় ! আর আমি প্রেমিকাহীন ক্যামেরা হাতে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরি ! বেকার সময়ে প্রেমিকাহীন থাকার চেয়ে ক্যামেরা হাতে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরা অনেক ভালো ! প্রেমিকারা আসলেই বুঝেনা প্রেমিকের হৃদয়ের দাবী !
তো এখন কথা হচ্ছে,  ছবি তুলে হবেটা কী ?!
- আমার উত্তর, কিচ্ছু হবে না । শুধুমাত্র  ছবি তুলে এর আগে বাঙলাদেশে কেউ কিচ্ছু হয় নি ! ছবি তুলে কিচ্ছু হয় না !
তাইলে ছবি তুলেন ক্যান ?
-মজা লাগে । আরাম লাগে । শান্তি পাই ।
ছবিগুলো দিয়া করবেন কী ? এক্সিবিশন ?
-ধুর ! ঐ কাজ পরিচিতি পাওয়ার জন্যে করে ! আমার পরিচিতি দরকার কী ! আমি পরিচিতি দিয়া করব’টা কী ! আমার দরকার শান্তি । পরিছন্ন জীবন  আর বিনোদন ।
তাইলে...
- মানুষের অনেক রকম ইচ্ছা আছে না ! আমারও সেই রকম একটি ইচ্ছা আছে, আমার তোলা সেরা একশো’টা ছবি নিয়ে আমার একটা " ছবি ঘর " হবে । প্রত্যেকটা ছবি ১২/১৬ সাইজের কালো ফ্রেমে বাধনো হবে । আর তার পাশে থাকবে আমার পছন্দের বই নিয়ে একটা লাইব্রেরী । এই জায়গাটি দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে খোলা হবে । কবি ও রাজনীতিবিদ ছাড়া আর কেউই আমার “ছবি ঘর” আর লাইব্রেরীতে প্রবেশাধিকার পাবে  না । ওখানে তারা আমার পয়সায় চা বিড়ি খাবে আর একজন আরেকজনকে গালাগালি করবে ! পরামর্শ দিবে ! সাহায্য চাইবে একজন আরেকজনের ।  আমার দেশে কবি আর রাজনীতিবিদদের  মুখোমুখি হওয়ার জন্যে আদর্শ কোন জায়গা নাই ! তাদের একটা জায়গা দরকার !
আরে ভাই , তাইলে ছবি তোলা তো পুরাই লসের আপনার জন্যে !
- হুম । মনে হতে পারে । তবে আমার কাছে শান্তির । আরামের । মজার আর আনন্দের ! আমার কাছে বিশুধবার মানে ভরপুর “নেশার রাত” আর শুক্রবার মানে “ছবির দিন” ।

রবিবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৫

আমি , প্রেম , পোট্রেট আর বিশুদ্ধ প্রেমিকা !



বহু ধরনের প্রেমের অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে । একটা প্রেম আমাকে এখনো অনেক ভাবায় । তখন আমি স্টুডেন্ট  । আমার অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপনের জন্যে পরিবারের সাথে আমার মনস্তাত্ত্বিক বেশ দূরত্ব তৈরি হয় । আমি চাই আমার মতো জীবন যাপন করতে তারা চায় আমার চিন্তাকে নিয়ন্ত্রন করতে । বিশ্বাস অবিশ্বাসের সংঘাত তৈরি হয় । (এটিকে কবি রুদ্র মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ দেখেছেন , এক জেনারেশনের সাথে আরেক জেনারেশনের চিন্তাগত দূরত্ব হিসাবে । যেমনটি আমার বাবার সাথে তার বাবার চিন্তাগত দূরত্ব ছিলো !) টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেয় পরিবার । ভীষণ অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে যায় আমার জীবন যাপন ।
ঠিক তখনই আমার এই প্রেমটি আমাকে শহরে থাকার মতো প্রতিমাসে অর্থের যোগান দিতে থাকে । আমি নির্ভর হয়ে পড়ি এই প্রেমের উপর । আমার মনে হতে থাকে এই প্রেম ছাড়া আমার বেঁচে থাকা অর্থহীন ।
প্রেমিকা শিক্ষিকা ছিলো । শিখিয়েছে অনেক কিছুই । বয়সে বেশ খানিকটা বড় ছিলো বলেই নিয়ন্ত্রন করতে পারতো আমায়। প্রেমিকার হাতে নিয়ন্ত্রিত হতে আমার বেশ ভালোই লাগতো । আমি নিয়ন্ত্রিত হতে চাইতাম প্রেমিকার ইচ্ছায় । আমাকে আমার প্রেমিকা নিয়ন্ত্রন করে – আহ ! কি এক ব্যাথা সুখের মতো বাজে !
এই প্রেমিকা আমাকে প্রেম শিখিয়েছে । দুপুরে ভাত খেতে গেছি নীলক্ষেতে , প্রেমিকা ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে বের করলো , একটা ছোট বাটি , খুলে দেখি ইলিশ মাছের ডিম ! ফোনে বলেছিলাম ইলিশ মাছের ডিম খেতে ভীষণ পছন্দ করি । তাই প্রেমিকা নিয়ে এসেছে ! আমি কোন কথা খাবার টেবিলে সেদিন বলতে পারি নি । নিশ্চুপ খেয়ে গেছি ! ঠুকঠাক এ কথা সেকথা সে বলেছে , আমি শুধু হ্যাঁ হু করেছি ! আমি ভাবছিলাম, এই মেয়েটি আমার মতো অনার্সের স্টুডেন্ট পড়ায় ! আর সে কিনা আমার প্রেমে পড়েছে ! আমি সেইদিনই বুঝতে পেরেছিলাম, চিন্তায় কাছাকাছি হলে বয়স কোন সমস্যাই না ! আমরা বেশ পড়তে পারি একজন আরেকজনকে ।
বিকালে ক্লান্ত হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে প্রেমিকা’কে বললাম, খুব ক্ষিধা পেয়েছে , প্রেমিকা হাত ধরে টেনে নিয়ে গেলো সিঁড়িতে । খুব যত্নে পরিস্কার করলো সিঁড়ি । দুজন ঘন হয়ে বসলাম । প্রেমিকা ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে ছোট একটি বাটি করে আমার হাতে দিলো, আমি খুলে দেখি , পায়েস ! সাথে একটা চোট চামচ !
আমি প্রথম আবেগি হয়েছিলাম সেইদিন ! আমি প্রেমিকার দিকে তাকিয়ে আছি ! প্রেমিকা পানির বোতল বের করতে করেত বলে, দেখো পায়েসটা ঠিক আছে কি না ! অনেকদিন পায়েসের গল্প শুনিয়েছি তোমায় ,এবার খাও ! অনেক যত্নে বানিয়েছি ! আমার হৃদপিণ্ড সেদিন ভীষণ কেঁপেছিলো ! আমি তেমন কোন কথা বলতে পারি নি ! চুপচাপ পায়েশ খেয়েছি ! আর প্রেমিকার দিকে নিশ্চুপ চেয়ে থেকেছি !
শিল্পি সঞ্চয়ের আঁকা এই প্রেমিকার একটি পোর্টট্রেট আমার বেডরুমে আছে । একটা সময় ছিলো আমি নিয়মিত এই পোর্টট্রেটের সাথে কথা বলতাম ! মনে হতো এইতো ঠোঁট নড়ছে ! আমার পাগলামি দেখে মুচকি মুচকি হাসছে ! আমি বেশ আবেগতাড়িত হয়ে নিয়মিত চুমু খেতাম ! এই প্রেমটি হারানোর পর আমি প্রথমবার বুঝতে পেরেছিলাম , প্রিয়জন হারানোর দহন কেমন ! কেমন একটা হৃদয় পোড়া গন্ধ নাকে লাগতো সব সময় !
প্রেমিকা হারানোর পর অনেকবার চেয়েছি পোর্টট্রেট’টি পানিতে ভাসিয়ে দিই ! কর্ণফুলী নদিতে ! প্রেমিকার সলিল সমাধি রচনা হবে ! পরক্ষনেই মনে হয়েছে , না ! আমি এমন অমানবিক প্রেমিক হতে পারবো না ! আমি মানবিক । আমার মানবতা আছে । প্রেমিকা হারানোর ক্ষোভে আমি তার পোর্টট্রেট নদীতে ভাসিয়ে দিতে পারি না ! আবার মনে হয়েছে, তাহলে বরং মেয়েটির ঠিকানায় পাঠিয়ে দিই ! পরক্ষনেই মনে হয়েছে, যেই প্রেম আমাকে  ঠিকে থাকার জন্যে অর্থের যোগান দিয়েছে , আমার প্রিয় ইলিশ মাছের ডিম বাসা থেকে রান্না করে নিয়ে এসে দুপুরে খাইয়েছে, আমার অতি প্রিয় পায়েশ নিজ হাতে বানিয়ে এনে আমাকে খেতে দিয়েছে সেই প্রেমিকার পোর্টট্রেট আমি নিজের কাছে সারাজীবন না রেখে পাঠিয়ে দিবো ! এটা বেশ অসম্মানিয় ! আমি প্রেমিকা’কে অসম্মান করতে পারবো না ! এমন সাহস দিয়ে আমাকে পাঠানো হয়নি !
আমি সিদ্ধান্ত নিলাম । তার প্রতি আমার প্রেম মরে যাক ! শিল্প বেঁচে থাক । এখন এই পোর্টট্রেট’টি আমার কাছে স্রেফ একটা শিল্পকর্ম । আমি এখন এই পোর্টট্রেট’টির সামনে দাঁড়ায় না ! মিছে মিছে বানিয়ে গল্প বলি না ! ঠোঁটের উপর আলতো করে চুমুও খাই না ! পোর্টট্রেট’টিও আগের মতো ঠোঁট নাড়িয়ে মুচকি মুচকি হাসে না ! আমার হারানো প্রেমিকার এই পোর্টট্রেট’টি এখন আমার বেডরুমে হারানো প্রেমের একটা শিল্পকর্ম ছাড়া অন্য কিছুই নয় ।
আমার বিশুদ্ধ প্রেমিকা’কে সেইদিন বলেছিলাম , বাবুনি ! ভাবছি পোর্টট্রে’টি এখান থেকে সরি ফেলবো ! সে মুচকি হেসে বলল, থাকুক না এখানে ! আমার কাছে এটা স্রেফ একটা শিল্পকর্ম ! এটি আমার দেখতে ভালোই লাগে !
বিশুদ্ধ প্রেমিকার কথা শুনে আমি সেদিন ভেবেছিলাম, আমি শালার হেব্বি হ্যাপি আছি ! হারানো প্রেমিকার প্রেমময় শিল্প আর বিশুদ্ধ প্রেমিকার প্রেম নিয়ে...

সোমবার, ১০ আগস্ট, ২০১৫

বিশুদ্ধ প্রেমিকার অত্যাচারে আমি অসহায়...! পর্ব-১

বিশুদ্ধ প্রেমিকা ফোন দিয়ে জিগাইল, বাবু কই? উত্তরে কইলাম, বাসায় । কি করো ? কইলাম, নেশা করি ! এই নেশা করা ছাড়া তোমার আর কোন কাজ নাই ? কইলাম , আপাতত নাই ! তাইলে সোনা তোমাকে একটা কাজ দিই ? সেটা আমি কইলেও দিবা না কইলেও দিবা !হুদাই জিগাইয়া লাভ কি ! কি কাজ দিবা বইলা ফালাও ! বিশুদ্ধ প্রেমিকা একটুখানি হাসিয়া কহিল, বাবু তুমি কথা বেশি বল... শোনো, আমি বাড়ি থেকে বের হইছি , কাছাকাছি এসে তোমাকে ফোন দিলে তুমি বাস কাউন্টারে এসে আমাকে নিয়ে যেও । (আমি ক্ষেপে গিয়ে) কইলাম, অই তুই আমারে ভোদাই পাইছস ! আমি পারুম না ! তুই বাড়ি থেকে একা এতোটুকু পথ আসতে পারলি আর কাউন্টার থেকে বাসায় আসতে পারবি না ! ইয়ার্কি মারার জায়গা পাস না !এই ফালতু কাজ আমি করতে পারুম না ! (বিশুদ্ধ প্রেমিকা একটু ঢং কইরা) ওহ বাবু ! এমন করো ক্যান ! তোমারে ছাড়া রিকশায় একা বসতে আমার ভালো লাগে না ! পাশে ফাঁকা ফাঁকা লাগে ! ওহ সোনা অমন কইরো না ! আইসো হ্যাঁ ! কইলাম , আইচ্ছা ! ( ইশ ! অমন প্রেম এড়িয়ে চলার ক্ষমতা আমাকে দেওয়া হয় নি !)
দাঁড়িয়ে আছি কাউন্টারে । প্রেমিকা এখনো আসে নি । বলল , পাঁচ মিনিট মতো লাগবে । আমি প্রতিক্ষা করছি ,ইশ! বিশুদ্ধ প্রেমিকা বাড়ি থেকে আসবে আমি আবার রিকশায় হাত ধরে প্রেম করবো । এলোমেলো ভাবে ঘুরবো । ট্রাফিক সিগন্যালে রিকশা থেমে গেলে সে হুট করে একটা চুমু দিয়ে আশে পাশের সবাইকে কিংকর্তব্যবিমুট করে দিবে ! মানুষ এখনো প্রেমিক প্রেমিকার চুমুর সৌন্দর্য বুঝতে শিখেনি ! আর আমি তার মাথার চুলে নাক ডুবিয়ে শ্যাম্পুর ঘ্রান নিবো !
এরই মধ্যে একটা গাড়ি এসে থামল । এই গাড়িতেই আমার প্রেমিকা আছে । তাই গাড়ির দরজায় চোখ স্থির করে রেখেছি । বাবু...বাবু... ডাকে আমার ঘোর কাটলো, অই তুমি ওখানে দাঁড়িয়ে আছো ক্যান! গাড়িতে এসে আমার চালের ব্যাগ তরকারির ব্যাগ কে নামাবে ! হুম । আমি ব্যাগগুলো নিতে নিতে বললাম, অই তুই কি আমারে প্রেম করার জন্যে ডেকেছিস নাকি কুলি গিরি করার জন্যে ডেকেছিস ! হারামজাদি ! ফালতু ! আমি রাগে গরগর করছি আর সে মুচকি একটা হাসি দিয়ে ড্যাং ড্যাং করে আমার পাশ ঘেঁসে গাড়ি থেকে নেমে গেলো ! আর আমি ভোদাই হয়ে দুই হাতে দুইটা বস্তা নিয়ে তার পিছে পিছে হাঁটছি... কি বিচ্চিরি দৃশ্য মাইরি...!

আহ কি অসহায় মৃত্যুর পরেও...! / জিপসি রুদ্র

আমি আর বিশুদ্ধ প্রেমিকা এক সাথে থাকি। প্রায় চার বছর ধরে। আমরা ভালোবাসি, আমরা প্রেম করি, আমরা জ্যোৎস্না মাখি, আমরা দেহ বিনিময় করি একজন আরেকজনের সাথে।
আবার আমাদের মন না চাইলে আমরা আলাদা আলাদা থাকি। সে তার জায়গায়। আমি আমার বাসায়। আমাদের সম্পর্কে বিবেদ নাই, বিদ্বেষ নাই, আছে শুধু সতেজ সজীব সবুজ ভালোবাসা!
আমাদের এই চার বছরের সম্পর্কে একটু একটু করে জমা হয়েছে কতো স্মৃতি কতো গল্প তা শুধু আমরাই জানি। আর কেউই জানে না।
নিলয়ের হত্যাকান্ডের পর আশা মনিকে জড়িয়ে যে সব কথা বাতাসে চাউর হইছে তা শুনে আমি তো বেশ স্তম্ভিত! আমি এখন আরো বেশি অসহায় বোধ করছি!
আমাকে যদি কেউ বাসায় এসে অথবা রাস্তায় খুন করে চলে যায় , আমার বিশুদ্ধ প্রেমিকা কী আদালতে আমার খুনের বিচার চাইতে পারবে না? আমার প্রেমিকা কী মামলা করতে পারবে না? সে বলবে যাকে খুন করা হয়েছে, সে আমার প্রেমিক। জিপসি রুদ্র। তাকে আমার সামনেই খুন করা হয়েছে। আমি দেখেছি। আমরা দুজন প্রেম করছিলাম এমন সময় অতর্কিত এসে দুজন আমাকে আটকে রাখে বাকি দুজন আমার প্রেমিকের উপর চাপাতি দিয়ে কোপাতে থাকে। অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণে আমার প্রেমিক আমার আদরের বয়ফ্রেন্ড আমার চোখের সামনেই মারা যায়। আমি তার চাক্ষুস সাক্ষী। মাননীয় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দয়া করে আপনি এখন আসামিদের গ্রেপ্তারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করেন। পুলিশ কী মামলা নিবে না? নাকি বলবে নিকট আত্বীয় ছাড়া এসব মামলা করা যাবে না? আচ্ছা আমার বিশুদ্ধ প্রেমিকা কি আমার নিকট আত্বীয় নয়? এই মেয়েটি শহরে না থাকলে এই শহরে আমার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে । আমার নিশ্বাস নিতে ভীষন কষ্ট হয়। আমার অস্তিত্ব সংকট দেখা দেয়। আমার গোটা পৃথিবী থেমে যায়। অথচ সে আমার খুনের বিচার চেয়ে মামলা করতে পারবে না! সবাই বলবে, তাকে মারলো তোমাকে মারলো না কেনো? তুমি যদি এতোই তার পেয়ারি প্রেমিকা হও তাহলে দুই এক কোপ তোমার গায়েও তো পরতে পারতো! পড়লো না কেনো?
আচ্ছা আমার পরিবার কী জানে, আমি লিভ টু গেদার করি? আমি খুন হওয়ার পরে সবাই যখন জানতে চাইবে, জিপসি রুদ্র একটি মেয়েকে নিয়ে এক সাথে থাকতো , আপনারা জানতেন? মেয়েটা বলছে , সে জিপসি রুদ্রের বিশুদ্ধ প্রেমিকা! আমার মা কি উত্তর দিবে? ধর্মপ্রাণ আমার মা কী বলবে, হুম। আমি জানতাম। নাকি সামাজিকতার হাত থেকে বাঁচতে বলবে, অই মেয়েটিই আমার একমাত্র আদরের পুত্রের খুনি। নইলে সে কেমনে অক্ষত থাকে?
খুনিরা তাকে কোপ দেয়নি এটিই তার মানে আমার বিশুদ্ধ প্রেমিকার অপরাধ হয়ে যাবে? ক্যান ভালোবেসে কেউ চাইলে এক সাথে থাকতে পারবে না? রাষ্ট্রের কাছে এর ব্যাখ্যা কি?
আমি ভীষন অসহায় বোধ করি। আমাকে কেউ খুন করে ফেলে রাখলেও ন্যায় বিচার পাবে না! আহ! স্বাধীন রাষ্ট্রের মানুষ আমি! জন্ম আমার সার্থক! সালাম হে আমার বন্গ জননী !

শুক্রবার, ২৯ মে, ২০১৫

আমার বাপ মাঝে মাঝে ভীষণ জ্বালায়...!

আমার বাপ নাই । মারা গেছে। তখন আমি চীন ছিলাম । বাপের চেহারাও দেখিনি । মরা বাপের চেহারা নিশ্চয় সুখকর কিছু নয় ! আমি শিখিয়ে দেওয়া সভ্যতার বিজারিত সন্তান । আমার বাপের চেহারা আমি মনে করতে পারি না । আমি বাপের চেহারা ভুলে গেছি ! মানুষ জীবনে বহু বিষয় ! বহু জিনিস ভুলে যায় ! আমিও ভুলে গেছি ! তবে মাঝে মাঝে গভীর রাতে বাপ আমাকে প্রশ্ন করে...
কিরে ব্যাটা , তোরে জন্ম দিয়ে আমি কি ভুল করেছি?
-জানি না ! আমার উত্তর
তোর যাপিত জীবন নিয়ে মানুষ আমার সারা জীবনের অর্জিত সুনাম নষ্ট করছে ! তারা বলছে আমি তোকে মানুষ করতে পারি নি!
-বাপ, এটা আমার জীবন । সিদ্ধান্তও আমার ! আমি যেনতেন ভাবে বেঁচে থাকতে চাই না ! আমি আমার মতো বেঁচে থাকতে চাই ।
আমাদের পূর্ব পুরুষের ঐতিহ্যগত একটা সমাজ আছে ! তুই চাইলে তোর ইচ্ছা হলেই তা ভাঙ্গতে পারিস না !
- আমি তোমার পূর্ব পুরুষের সমাজ ভাঙতে চাই না ! আমি শুধু আমার মতো করে বেঁচে থাকতে চাই ! প্রত্যেক মানুষের নিজের মতো করে বেঁচে থাকার অধিকার হরণ করছে তোমার পূর্ব পুরুষের সমাজ !
গত কিছুদিন আগে তোর মা'র সাথে কথা বলেছিলাম, শুনলাম তুই নাকি বাড়ি যাস না ! তোর মা কাঁদে...
-বাড়ি আমায় টানে না ! ওখানকার মানুষগুলো ভীষণ ধার্মিক ! তারা আমায় আর ভালোবাসে না ! হুম , মা ভীষণ কাঁদে ... ! ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদে! আমি একবার শুনেছিলাম মা'র কান্নার শব্দ , সেইদিন মা তোমার জন্যে কেঁদেছিলো ! বাবা ! মা তোমায় এখনো ভালোবাসে...!
তুই ভালোবাসিস না ?
-না ।
কেন ?
-তুমি ভালোবাসার জন্যে আমার ভেতরে জায়গা করতে পারনি । তুমি বাবা হিসাবে আমার কাছ থেকে খুব কম নাম্বার পাও ! তুমি হয়তো , মা'র কাছে ভালো স্বামী তবে আমার কাছে ভালো বাবা নও !
ভীষণ কষ্ট পেলাম । আমি তোর জন্যে কি করিনি ? অসুস্থ হলে ডাক্তার খেতে চাইলে খাবার , লেখাপড়া জামা কাপড় সব আমি তোর জন্যে করিনি ! একজন বাবা হয়ে যা করে তা সবই আমি করেছি! তুই আমাকে খারাপ বাবা বলতে পারিস না ! - বাবা ভীষণ উত্তেজিত হয়ে গেছে ! উত্তেজিত হলে বাবার চোখ টকটকে লাল হয়ে যায় ! তাই এই মুহূর্তে বাবার সাথে কথা বলতে ইচ্ছা করছে না ! তবে এই প্রশ্নটার উত্তর দেওয়া জরুরী !
-বাবা , তুমি যা করেছ তা একজন জন্মদাতা হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছো মাত্র ! ওগুলো তোমার দায়িত্ব ।  একজন বাবা হিসাবে তুমি আমার সাথে কখনোই কোনদিনও বন্ধুর মতো মেশোনি ! আমি তোমাকে জীবনের একদিনও তোমাকে বন্ধু ভাবতে পারি নি ! আমি তোমাকে ভীষণ ভয় পেতাম ! তুমিই বল , ছেলে যদি বাবা কে ভয় পায় তাহলে ,সে শিখবে কি ? বাবা তুমি এখন যাও তোমার সাথে কথা বলতে আমার বিরক্ত লাগছে ! আমি এখন নেশা করবো !
বাবা আমার কষ্ট পেয়ে চলে যায় ! নাকি পিছন থেকে লুকিয়ে লুকিয়ে ছেলের নষ্ট হওয়া দেখছে ! কে জানে !

সোমবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৫

চাওয়া বেশ অল্প.../ জিপসি রুদ্র

আমাদের নগর পিতা নির্বাচিত হওয়ার প্রক্রিয়া চলছে । নগরের পিতা আগেও ছিল। এখনো হবে । কে হবে, নয়া ? না পুরান ? । তা আমার ভবিতব্য নয় ! কারণ নগরে পিতা থাকলেও কি! না থাকলেও কি ! তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না । এরা আমার কোন চাওয়ারই প্রতিফলন করতে পারে না ! তাই তাদের একেবারেই আমার দরকার নেই ! 

এইবার বলি আমার চাওয়া গুলো কি কি । আমার চাওয়া গুলো নেহায়তই বেশ ছোট । চাইলেই তারা পূরণ করতে পারে । আমার চাওয়া তারা কতো টাকা বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে নয় ছয় করবে সেটি জানা না । আমার চাওয়া তারা আওয়ামীলীগ নাকি বিএনপির কর্মীদের দিয়ে নৈরাজ্য করবে সেটি জানাও না । আমার চাওয়া তারা এখন যেভাবে জনগনের দ্বারে দ্বারে প্রতিদিন যাচ্ছে ঠিক সেইভাবে প্রত্যেকদিন ধরনা দিবে ভবিষ্যতে-এমন প্রত্যাশাও না...
আমার চাওয়া শুধু তারা নগরকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখবে , যেভাবে তারা তাদের গায়ের শার্টটি পরিস্কার রাখে। ডাস্টবিনের দুর্গন্ধে পেট মুচড়িয়ে বমি আসে । আমার নগরে রাস্তার উপর ময়লার স্তূপ অথবা ডাস্টবিন কোনটায় দেখতে চাই না । আর নগরের ভেতর প্রত্যেকটি ফুটপাত দখলমুক্ত করবে । ফুটপাত দখলমুক্ত করতে গিয়ে যদি কোন বুদ্ধিজীবী কোন রাজনীতিবিদ কোন কলামিস্ট মায়া কান্না দেখিয়ে হকারদের পক্ষে কথা বলে , বক্তব্য দেয় ,অথবা কোথাও লেখে তাহলে তাদের বাড়িতে উচ্ছেদকৃত হকারদের দুজন করে যেন পাঠিয়ে দেয় । কারণ সমস্যা বলা নয় সমস্যা সমাধান করায় আমাদের লক্ষ্য ।

কাল্পনিক নয় ! সত্যি / জিপসি রুদ্র

(এটি কাল্পনিক কথোপকথন নয় । এটি ভরপুর নেশা করার পর আমার মাতলামি । মাতালদের দোষ বিবেচনায় ধরা হয় না ! )
স্যার ছেলে গুলো আপনার দলের । এরেস্ট করবো ?
-খবরদার ! এরা দলের শক্তি । আমাদের অতি আদরের ছেলে পেলে । অনেক গুলো শেয়ালের মধ্যে দুই একটি মুরগি ঢুকে গেলে যা হয় ! এদের এরেস্ট করা যাবে না ! এরেস্ট করলে পাবলিকের কাছে বিব্রতকর অবস্থায় পরতে হবে !

স্যার এইটা নিয়ে সবাই আমাদের দোষ দিচ্ছে । উঠতি উঠতি পোলাপাইনরা তো কথায় কথায় পুলিশের দিকেই আঙ্গুল তুলে ! ভীষণ ঝামেলাবাজ! তারা দলের চাইতে সত্য কথা আগে বলে !আমরা তো স্যার আপনাদের দিক থেকেও আর পাবলিকদের দিক থেকেও ভীষণ চাপে আছি !
-
ব্যাপার না ! পাবলিকদের আই ওয়াশ করার জন্যে একটা টেলিভিশন চ্যানেল কে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে । তারা বেশ কিছুদুর এগিয়েছে । আপাতত দাড়িওয়ালাদের উপর চালিয়ে দেওয়া হয়েছে । পাবলিক বিশ্বাস করতে শুরু করেছে । একটা বিশ্বাসযোগ্য গল্প বানিয়ে চালিয়ে দিতে পারলেই পাবলিক বিশ্বাস করে । পাবলিক বিশ্বাস করতে ভালোবাসে ! তারা ভীষণ বিশ্বাসী ।
স্যার ঘটনা টা কিন্তু আপনার দলের কিছু ছ্যাঁচড়া ছেলে পেলে করেছে । সবাই দেখেছে । এইটা স্যার তাবৎ নারীর অপমান । আমার মনে হয় এরেস্ট করা দরকার । নইলে এই দেশে নারীরা ভীষণ অনিশ্চয়তায় ভুগবে ।
-
খবরদার ! এরেস্টের কথা মুখে আনবেন না । এরা আমাদের সোনার ছেলে ! এদের নিয়েই আমাদের রাজনীতি । চাকরির মায়া আছে ? নইলে দেখবেন বাকি জীবন বুড়া বয়সে বউ বাচ্ছা নিয়া না খেয়ে মরতে হবে !
ইয়েস স্যার ! ইয়েস স্যার ! তাইলে কি স্যার দুই একজন দাড়িওয়ালারে ধরে নিয়ে এসে খোঁয়াড়ে দিবো ?
-
গুড ! এতক্ষণে লাইনে এসেছেন । না এখন না । আমি বলবো । উপর লেভেলে একটু আলোচনা করতে হবে । শুনছি আপাতত ফারজানা রুপা টোপ ! আপাতত চেপে যান !
ইয়েস স্যার!

শুক্রবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১৫

পুরুষের প্রতি বিদ্বেষ ছড়ানো নয় । নারী পুরুষের সহাবস্থান নিশ্চিত করায় হোক উদ্দেশ্য / জিপসি রুদ্র

আজ গিয়েছিলাম নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদে আন্দোলন করতে । আমি জানি এই সমস্থ মানববন্ধন আর রাস্তায় গোল হয়ে বক্তৃতা দেওয়া  আন্দোলনে কিচ্ছু হয় না । তারপরও গিয়েছিলাম । এই সমস্থ আন্দোলনে মূলত মিডিয়া আর পুরুষ মানুষের লাভ হয় । মিডিয়া কিছু রসায়ন যুক্ত খবর পায় আর পুরুষরা আরও মজা পায় । ইস্যু বেশ রসালো ! আর মিছিলের সামনে নারী !
সমস্যার সমাধান কিচ্ছু হয় না । এক নারী বক্তা নারীর ড্রেস কোড ঠিক করে দিলেন , বললেন, "নারী ফতুয়া পরবে । জিন্স পরবে । যেন সহজে মুভ করা যায় । যাতে কোন পুরুষ টিজ করতে আসলে তাকে দৌড়ে গিয়ে ধরে থাপড়ানো যায় " ।
এটি পুরুষের প্রতি বেশ বিদ্বেষ ছড়ানো টাইপ বক্তৃতা । কেউ টিজ করেছে , এটি একটি অপরাধ । আর কেউ অপরাধীকে মারছে এটি আরেকটি অপরাধ । মোদ্দা কথা এই টাইপ বক্তৃতা একটি অপরাধকে থামাতে আরেকটি অপরাধের উস্কানি দেয় !সমস্যার সমাধান চাই । সমস্যা বাড়াতে নয় বেবি !
ছেলেরা নারীদের প্রতি এতো সহিংস কেনো
ছেলেরা চায় নারীদের সঙ্গ পেতে ।কারণ এটি বেশ উপভোগ্য !তারপর একটু রসায়ন । কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আমার এইখানে’তো নারী পুরুষের সম্পর্ক ইজি গোয়িং নয় । একটি ছেলে একটি মেয়ে এই সময়েও আলাদা আলাদা পাঠকক্ষে পাঠ নেয় । তখনই বুঝতে শিখে  নারী পুরুষের সহাবস্থান এইখানে পাপ ! একটা নারীর সাথে একটা ছেলে কথা বলতে গেলেও নারীটি লজ্জায় লাল হয়ে যায় ছেলেটি আমতা আমতা করে !
এই বাজে চর্চা একদিনে হয়নি ।এটি শতবছরের আমাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া বাজে সংস্কৃতি।
ছেলেদের গহীনে নারীর প্রতি যৌনতার আকাঙ্ক্ষা বাড়তে থাকে । কিন্তু একটা সময়ের আগে যৌনতা এইখানে নিষিদ্ধ । তখন ছেলেরা আস্তে আস্তে শেয়াল হওয়ার চেষ্টা করে । আর শেয়াল যখন একা একটা মুরগিকে পেয়ে যায় তখন মুরগির শরীরে কোন অংশ ধরে টান দিবে তার হুশ থাকেনা । ব্যাপার টা এমন ! অনেক সাধের মুরগি আমি পেয়েছি ! খেতেই হবে !
আমরা যদি নারী পুরুষের সহাবস্থান নিশ্চিত করতে পারি তাহলে কমতে থাকবে নারীর প্রতি পুরুষের সহিংসতা ।একটা সময় একেবারেই বন্ধ হয়ে যাবে এটি । এইটা করতে হলে বাঙলাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নারী পুরুষের সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে ।কারণ গোটা দেশের প্রায় সকল বাচ্চা এখন স্কুল মাদ্রাসা মুখী ।ছেলেরা বুঝতে শিখবে আমার পাশে বসে থাকা মেয়েটি আমার বন্ধু অথবা আমার বোন । অথবা আমার প্রেমিকা । সমস্যাটা যেহেতু মগজে তাই চিকিৎসাটা মগজ থেকে  শুরু হওয়া বেশ কামেয়াবি ! 
এই সময়ে নারী পুরুষের আলাদা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যুক্তিকতা আমি একেবারেই খুঁজে পাই না ।
অন্যান্য বিষয় তো আছেই ! রাস্তায় প্রেমিকার হাত ধরে হেঁটে যাবো সবাই ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে । অতি আদরের প্রেমিকাকে চুমু খাবো পিছন থেকে পুলিশি বাঁশি !পিপ !
প্রেম এইখানে এখনো পাপ । তাই এইটা ভীষণ গোপন রাখতে হয় ।নইলে মিউচুয়াল আন্ডারস্ট্যান্ডিং এ যৌনতা কেন অপরাধ হবে ?

এইখানে নারী পুরুষের আলাদা আলাদা অবস্থান পুরুষদের ভেতর ক্রাইসিস তৈরি করেছে । যেটা পরে ভায়োলেন্সে রুপ নেয় । যেটা কাম্য নয় । 
আসুন পুরুষের প্রতি বিদ্বেষ নয় । নারী পুরুষের সহাবস্থান নিশ্চিত করতে সবাই সমান জায়গা থেকে কাজ করি ।একটু শিখিয়ে দিই না পাশের জনকে , এই ! নারী পুরুষ সম্মতিক্রমে চুমু খেলে গুনাহ হয় না !

বুধবার, ৪ মার্চ, ২০১৫

ইসলামের শত্রু মুসলমানরাই


ধর্মকে
 অপমান আমার উদ্দেশ্য নয় । আমাকে মারবেন না ! 
২০০৩ সালের শেষের দিকে করা এক জরিপ অনুযায়ী বাঙলাদেশের গোটা জনসংখ্যার ৯০.৪ ভাগ ইসলাম ধর্মের অনুসারী মুসলমান। ৮.২ ভাগ হিন্দু । বাকি ১.৪ ভাগ বৌদ্ধ আর খৃস্টান ধর্মাবলম্বী । এই রিপোর্টে বলা হয়েছে , বাঙলাদেশে নাস্তিক খুঁজে পাওয়া বেশ দুষ্কর ! " atheism is extremely rare." 

২০০৩ থেকে ২০১৫ । এই সময়ের মধ্যে বাঙলাদেশে কতজন নাস্তিক হয়েছে ? আমরা যদি বাঙলাদেশের জন্ম থেকে আজ দিনটি পর্যন্ত হিসাব নিকাশ করি তাহলে হিসাবটা এই রকম দাঁড়ায় । বাঙলাদেশের বয়স প্রায় ৪৪ (চুয়াল্লিশ) বছর । ১৯৭১ থেকে ২০০৩ পর্যন্ত এই ৩২ বছরে বাঙলাদেশে নাস্তিক খুঁজে পাওয়া বেশ দুস্কর। বলছে জরিপ ।২০০৩ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত এই বার বছরে নাস্তিক হলেও সেটি নেহাতই বেশ অল্প ।
অথচ এই অল্প কজন নাস্তিকের জন্যে গোটা জনসংখ্যার ৯০.৪ ভাগ ইসলাম ধর্মের অনুসারী মুসলমান জঙ্গি হয়ে গেছে ! এখন মোল্লা দেখলেই বুকের ভেতর কেমন যেন চিনচিন করে ! মোল্লা যত পরিচিতই হোক না কেনো মনে হয় আড়ালে তার জঙ্গি হাসে !
ইসলাম ধর্মের অনুসারী মুসলমানরা যদি তাদের চিন্তা আর প্রজ্ঞা'র জায়গায় কাজ না করে তাহলে এই ইসলাম ধর্ম পৃথিবীর সবচে আতংকের ধর্মে পরিণত হবে । এখন ইসলাম ধর্ম এমন হয়েছে , এই ধর্ম নিয়ে কথা বললেই কোন এক অজ্ঞাত জায়গা থেকে রক্তের গন্ধ ভেসে আসে ! মুসলমানদের নিয়ে বেশ হাস্যকর একটা জোকস প্রচলিত আছে নাস্তিক সমাজে , " যে মসজিদে যাচ্ছে নামাজ পড়তে সেও মুসলমান । আর যে মসজিদে বোমা মারছে সেও মুসলমান" ।
আমার অভিজ্ঞতা থেকে আমি বলতে পারি , ইসলামের শত্রু মুসলমানরাই । হাতে গোনা কয়েকজন নাস্তিক দিয়ে এতো বড় ধর্মের কিচ্ছু করা সম্ভব নয় । এটা মুসলমানরা যতো তাড়াতাড়ি বুঝতে পারবে ততো তাড়াতাড়ি আমার বাপ দাদার শান্তির ধর্ম ইসলামের হারানো সুনাম পুনরুদ্ধার করতে পারবে 

ধর্ম বিরোধিতা আর আর নাস্তিকতা এক জিনিস নয় / জিপসি রুদ্র

নাস্তিকতার সাথে ধর্মবিরোধিতার কোন সম্পর্ক নাই । নাস্তিকতার মানেই হল অবিশ্বাস । কার প্রতি অবিশ্বাস ? ঈশ্বরের প্রতি অবিশ্বাস । এটাই নাস্তিকতা ।যারা অমুক ধর্মকে গালি দেয়, তমুক ধর্মকে গালি দেয়, তারা সবাই অমুক ধর্মের বিরোধী তমুক ধর্মের বিরোধী টাইপ লোক ।তারা নাস্তিক নয় । 

আমার অফিসে প্রায় হাজার খানেক নারী পুরুষ আমার অধিনে কাজ করে এবং তারা প্রত্যেকেই জানে তদের বস নাস্তিক ।একদম বিশুদ্ধ নাস্তিক। প্রতিদিনই তাদের নানান রকম সমস্যা আমাকে সমাধান করতে হয় । একদিন এক ছেলে এলো অফিস ছুটির আধ ঘণ্টা আগে । বললো , বস... আমি বললাম, কি হয়েছে ? আমাকে আমার সুপারভাইজার আসরের নামজ পড়তে যেতে দিচ্ছে না । তোর সুপারভাইজার কে ? মাসুদ বস । বল তারে আমি ডাকছি । ছেলেটি দৌড়ে গিয়ে তার সুপারভাইজার মাসুদ'কে ডেকে নিয়ে এলো । আর আমি নির্দেশ দিলাম ।
যদি কেউ নামাজ পড়ার জন্যে যেতে চায় তাহলে তাকে যেন যেতে দেওয়া হয় । এটিই এখন আমার ফ্লোরের নিয়ম ।

"নিজের পথের পথিক হবি ।
জ্ঞান নিবি ওদের থেকে ।
ওদের পথের পথিক হলে
পাবি না তুই তোকে"

সোমবার, ১৯ জানুয়ারী, ২০১৫

খালেদা সমীপে... / জিপসি রুদ্র

দেশীয় রাজনীতি মানেই এখন একটা বিরাট আতঙ্ক । আমি আগেও বলেছি , আওয়ামীলীগের রাজনীতি আমি ভীষণ ভয় পায় । বিএনপির রাজনীতি আমি একদমই পছন্দ করি না । জাতীয় পার্টি একটি চরিত্রহীন রাজনৈতিক দল । জামাত আলোচনার যোগ্য নহে ।
আর আমি এও চাইনা যে , দেশীয় রাজনীতি থেকে বিএনপির রাজনীতি একেবারেই জাদুঘরে চলে যাক । কিন্তু বিএনপি এখন যে ধরনের রাজনীতি করছে তাতে মনে হচ্ছে আমি না চাইলেও বিএনপির রাজনীতি এমনিতেই জাদুঘরে স্থায়ী দখল নিয়ে নিবে !
সমস্থ সমস্যার সমাধান দুই জায়গাতে করা যায় । একটা হল, আলোচনার টেবিল । বাকিটা , রাজপথ । এখন যেহেতু দেশীয় রাজনীতিতে আলোচনা করার জন্য এখনো কোন টেবিলই তৈরি হয় নাই সেখানে আলোচনার আপাতত কোন সুযোগ নাই । সেটা আমরা সাধারণ জনগন নিজ দায়িত্বে বুঝে নিয়েছি । বাকি রইল , রাজপথ ।
রাজপথে তার পক্ষেই সমাধান যায়, যার ক্ষমতা বেশি । এখন বিএনপি যে রাজপথে সমস্যা সমাধান করতে চাচ্ছে , তারা কি মনে করছে তারা সরকারের চাইতে বেশি ক্ষমতাবান ? সরকারের চাইতে বেশি ক্ষমতাবান হল জনগন । জনগন কি বিএনপির এই রাজপথের আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত ? আমার সোজা মাটা উত্তর । একেবারেই না । জনগন কখনোই পেট্রোল বোমা নিয়ে আন্দোলন করে না । জনগন কখনোই গাড়িতে আগুন দিয়ে আন্দোলন করে না । জনগনের আন্দোলন একেবারেই শান্তিপ্রিয় । তারা শান্তিপ্রিয় আন্দোলন দিয়ে সরকারকে বাধ্য করে , তাদের দাবী মেনে নিতে । কিন্তু এখন বিএনপি ভাড়াটে নিয়ে রাজপথে আছে । বিএনপি নেত্রীর এটা বুঝতে আর কত দেরি লাগবে ? বিএনপি নেত্রীর তারেক যে ভুল পথে হাঁটছে সেটা এখনো বোঝা হয়ে উঠেনি এই সমীকরণ বুঝাতো বেশ দুস্কর হবে বলে মনে হচ্ছে ! 
বিএনপির প্রতি আমার আহ্বান থাকবে, তারা আন্দোলনের নামে এই নৈরাজ্য না চালিয়ে দলীয় শক্তি সঞ্চারে যেন মনযোগী হয় । রাজপথ কখনোই বুইরা রাজনীতিবিদ দিয়ে দখলে রাখা যায় না । রাজপথ দেখলে রাখতে হয় ছাত্র আর যুবক দিয়ে । তাই বিএনপি নেত্রী ছাত্রদল ও যুবদলকে গোছানোর প্রতি মনযোগী হলে এই নৈরাজ্য চালানোর থেকে হাজার গুণ ভালো হবে ।
বাঙলাদেশে কয়টা কলেজ ছাত্রদলের নিয়ন্ত্রণে ? বাঙলাদেশের কোন জেলায় যুবদল সুসংগঠিত? বিএনপি নেত্রীর মাথা কি এতোটাই মোটা যে এই সহজ রাজনৈতিক সমীকরণ গুলো তার মাথায় ঢুকে না !
বিএনপি নেত্রী, তারেক'কে থামতে বলেন । দল গোছান । এই চলমান নৈরাজ্য এখনই বন্ধ করেন । বাসায় ফিরে স্বাভাবিক জীবন যাপনে মনোযোগ দেন। তারপর না হয় আন্দোলনের কথা ভাবা যাবে । আর সেই আন্দোলন হবে  সত্যিকার অর্থে একেবারেই জনগনের আন্দোলন ।