শনিবার, ১২ জুলাই, ২০১৪

আমার জন্মের কোন ইতিহাস নাই... / জিপসি রুদ্র

আমার জন্মদিনে যারা আমাকে উইশ করেছেন তাদের কাছে আমার কৃতজ্ঞতা আমৃত্যু থাকবে... তবে আমি আমার জন্ম নিয়ে মোটেও গর্বিত নই বরং আমি খুবই বিচলিত ! আমি সব সময় ভাবি আমার জন্ম না হলে কি এমন ক্ষতি হতো পৃথিবীর? আর আমার জন্ম দিয়ে কি-ই-বা লাভ হলো? এই দুইটা প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে শূন্য! আমি একরাতে কথা বলেছিলাম এক ঠোকাইয়ের সাথে । এই ঠোকাইয়ের নাম ছিলো কামাল । বয়স দশ বার হবে । তখন রাত দুইটা ছুঁইছুঁই । জিজ্ঞাস করেছিলাম ।
বাড়ি কই ?
সে বলল, মাগুরা
বাড়ি যাস না?
না
ক্যান?
ভাল্লাগেনা ! সবাই আমারে মাগির পোলা ডাকে! আইচ্ছা ছার আমি একটা বিষয় বুইঝা উঠতে পারত্যাছিনা...
আমি জিজ্ঞাস করলাম, কি বিষয়?
মাগিবাজি করলে আমার মা করে । এইটা তার কাজ । তাই তারে সবাই মাগি বলে ডাকে । এইটা তার পরিচয় । কাজ দিয়েই তো ছার মানুষের পরিচয় তৈয়ার হয়। এই যে দেহেন আমি কাগজ ঠোকাই । আমার কাজ ঠোকাই ।  তাই আমার পরিচয় ঠোকাই । কিন্তু বাড়িতে গেলে আমারে ঠোকাই না ডাইকা আমারে ডাকে মাগির পোলা ! তাইলে ছার ব্যাপারটা কি দাঁড়াইলো?
আমি বললাম , কি দাঁড়াইলো...?
আমার মা'র কাজ দিয়ে আমার পরিচয়... ছার এইটা কি ঠিক? ছার মাগির পোলা কি কারো পরিচয় হতে পারে?
আমি সেই দিন তাকে কোন উত্তর দিতে পারিনি... ওই রাতে বাসায় এসে কামাল এর জায়গায় নিজেক দাঁড় করায় । আর লিখে ফেলি এই কবিতাটি...

আমার জন্মের কোন ইতিহাস জানা নাই
আমি কার ঔরসজাত তার সঠিক কোন তথ্য আমার মার কাছে নেই
টুনটুনিবালার কাছে শুনেছি মোয়াজ্জিনের গগন বিধারী ডাকের সময় আমার জন্ম
মোয়াজ্জিনের গগন বিধারী ডাক এখন আমার কাছে আতঙ্ক। 

এ পাড়ায় আমার অসংখ্য তরুন , মাঝবয়সী বাপেদের আগমন
এদের মাঝে কেউ একজন আমার বাবা
আমি যখন ও গলিতে যাই সবাই আমাকে জারজ বলে
অথচ এদের অনেকেই আমার এ পাড়ায় আসে
আমার মার স্তন চুষে
স্ফীত লিঙ্গের ধবাল কষাঘাতে আমার মার জরায়ূ জর্জরিত হয়।
তাদের বীর্যের সংমিশ্রনে আমার জন্ম।

প্রতিদিন কুকুরের ডাকে আমার ঘুম ভাঙ্গে
মোয়াজ্জিনের ডাকে আঁতকে উঠি
বাপেদের পদচারনায় মুখরিত হয় আমার মার ঘর
আর ................................................................
মানুষের কাছে শুনি আমার জন্মের কোন ইতিহাস নাই।

একটাইতো জীবন একটু অন্য রকম হলে ক্ষতি কি...! / জিপসি রুদ্র

আজকে গিয়েছিলাম একজনের সাথে দেখা করতে । তার সাথে অনেকদিন ধরেই ফোনে কথা হতো কিন্তু সময়ের অভাবে দেখা করা হয়ে উঠেনি । আজকে ফ্রি থাকার কারনে তার সাথে দেখা করার সিদ্ধান্ত ।
পূর্ব নির্ধারিত স্থানে দাঁড়িয়ে আছি প্রায় পনেরো মিনিটের চাইতে বেশি ।  মেয়েটি আসার কোন নাম গন্ধ নেই । একবার ভাবলাম চলে যাই । আবার ভাবলাম না আর একটু অপেক্ষা করি । পকেটে মোবাইলটা বেজে উঠলো । মোবাইলটা রিসিভ করে বললাম
কই?
সে বলল, তুমি কই
আমি যেখানে থাকার কথা সেখানে
পিছনে দেখো
আমি পিছন ফিরে তো অবাক ! অসাধারণ !
এই ! এই রকম হা করে আছো কেনো
আমার সরল উত্তর , আমি আমার লাইফে এতো কামুক  মেয়ে আগে দেখিনি !
ঢং!
ঢং না ঢং না ! বাসায় যদি আজকে আমার মা না থাকতো তাহলে তোমাকে আজকে আমার বাসায় নিয়ে যেতাম !
এই লুইচ্ছামি হচ্ছে কিন্তু...! সে মুখ টিপে বলল
ব্যাপার না বালিকা , চলো রিকশায় একটু লুইচ্ছামি করে আসি...
শুধু একটু...! একটু বেশি হলে কি সমস্যা...
“চলো কোন সমস্যা নেই” বলে রিকশার দিকে পা বাড়ালাম...
বালিকা বলল,  চলো ! একটাইতো জীবন একটু অন্য রকম হলে ক্ষতি কি...!


সোমবার, ৭ জুলাই, ২০১৪

বঙ্গবন্ধু ছাড়া বাঙলাদেশ চলতে পারলে এই একজন সাকিবের জন্য বাঙলাদেশ ক্রিকেট থেমে থাকবে না... / জিপসি রুদ্র

পরিমার্জিত ক্রিকেট পাগল স্থুল চিন্তার মানুষের মাথায় চিন্তার নয়া খোরাক দিতে আমার এই লেখা । সাকিবের শাস্তি নিয়ে হা-হুতাশ করা বাঙলাদেশ ক্রিকেটের জন্য বিপদজনক । খেলা’তো শুধু আমার আর আপনার আবেগ দিয়ে চলে না চলে একটা নির্দিষ্ট নিয়ম কানুনের মধ্য দিয়ে । আর সেই নিয়ম কানুন যে ভাঙ্গবে সেই শাস্তি পাবে এটাই আপাত দৃষ্টিতে সরল ও সহজাত। আর সে কতোবড় খেলোয়াড় তা বিবেচনায় না আনায় শ্রেয়...
সাকিব সিপিএল খেলতে যাওয়ার জন্য লিখিত অনুমতি না নিয়ে যে সঠিক কাজটি করেনি সেটি সে নিজেও জানতো । এটা খুব সোজা একটা কথা যে কোথাও খেলতে গেলে বোর্ডের লিখিত অনুমতি পত্র লাগে । আর সাকিব সেটা না নিয়েই উড়াল দিলো খেলতে । বোর্ড যদি এই ব্যাপারে আর নাক না ঢুকাতো তাহলে পানি আর এতোটুকু গড়াতো না । বোর্ড যখন নাক ঢুকালো তখনই সাকিবের উচিত ছিলো চুপচাপ কথা না বাড়িয়ে ফেরত আসা । কারণ সে প্রসিডিউর ঠিকঠাক মতো শেষ করেনি। কিন্তু সে সেটি না করে বাঙলাদেশ ক্রিকেটকেই থ্রেড দিয়ে বসলো সাকিব একবারও ভাবলো না সে কারে থ্রেড মারলো । আরে এই সাকিব এই বাঙলাদেশ ক্রিকেটেরই ঔরসজাত । সাকিবকে এই বাঙলাদেশ ক্রিকেটই লালন পালনে করে বড় করেছেআর সে কিনা ফাউল করার পরও নিজের অহংবোধ প্রকাশ করে বসলো । বোর্ড এখানে যা করার তাই করলো । আমাদের গ্রামে একটা কথা প্রচলিত আছে “ বাপের আগে বাল কাটতে গেলে ধোন কাটা যায়...” এই লেখাটা যেহতু অনেক সুশীল ব্যাক্তিরা পড়বে তাই কথাটা নিয়ে আর বিশধ ব্যাখ্যায় গেলাম না ।
যারা সাকিবের এই শাস্তি নিয়ে মায়া কান্না কাঁদছেন তারা একবার ভাবুন , আপনারা বাঙলাদেশের ক্রিকেটকে ভালোবাসেন নাকি সাকিবকে । হয়তো অনেকেই বলবেন দুই’কেই । যখন দেখবেন এই দুই’ইয়ে সংঘাত তখন তার একটিকেই বেঁচে নিতে হবে । আর সেক্ষেত্রে বাঙলাদেশের ক্রিকেটই সামনে চলে আসেকারন বাঙলাদেশ ক্রিকেটই সাকিবকে জন্ম দিয়েছে । এই বাঙলাদেশ ক্রিকেট বেঁচে থাকলে বহু সাকিবের জন্ম হবে । সাকিবের হুমকি ছাড়ার আগে একবারের জন্য হলেও ভাবা উচিত ছিল, এই বাঙলাদেশ ক্রিকেট থেকে বহু মহাকালের সাকিব এখন এফিটাফ। তাদের ছাড়া কি বাঙলাদেশ ক্রিকেট থেমে ছিলো ? এই মহাকালের সাকিব ছাড়া কি বাঙলাদেশ ক্রিকেট আজকের সাকিব হওয়া পর্যন্ত এগিয়ে আসেনি ? ব্যাপারটা আরও বোধগম্য করার জন্য বলতে হয় , সাকিব কি একবারও ভাবলো না , বঙ্গবন্ধু ছাড়া বাঙলাদেশ চলতে পারলে এই একজন সাকিবের জন্য বাঙলাদেশ ক্রিকেট থেমে থাকবে না...  

আপনি বোর্ডের অনুমতি নিবেন না, আবার সাকিবত্ব দেখাতে চাইবেন আর শাস্তি পাবেন না, এটা তো হয় না । বেয়াদবির একটা পরিশীলিত স্তর আছে সেটা অতিক্রম করলেই শাস্তি অবধারিত। তাই বিষয়টা নিয়ে ভাবুন ,  আজকে সাকিব কালকে অন্যজন তারপরদিন তারপরেজন এইভাবে বোর্ডের লিখিত অনুমতি না নেওয়ার মিছিলে থাকলে বোর্ড বলে যে একটা কিছু আছে সেটার অস্তিত্ব আর থাকবে?তাই ভবতে হবে নয়া করে চিন্তার পরিধি করতে হবে ব্যাপক । নিজের ধারণ ক্ষমতা বাড়াতে হবে আরো... আগে বাঙলাদেশের ক্রিকেট তারপর সাকিব । আমাদের আজকের সাকিব নয় তাকেতে হবে ভবিস্যতের শত সাকিবের দিকে... যে সাকিব খেলবে দেশের হয়ে টাকার হয়ে না...     

শুক্রবার, ৪ জুলাই, ২০১৪

নারী শরীরে মিষ্টি ঘ্রান খোঁজার চাইতে রাষ্ট্রীয় সমস্যা সমাধানে যারা আছে তাদের একটু জ্ঞান দেওয়া অনেক শ্রেয়... / জিপসি রুদ্র

বাপ্পি খুব নারী পাগল ছেলে । নারী শরীর ঘেঁসতে তার খুব ভালো লাগে । বলতে গেলে বলতে হয়, নারীই তার একমাত্র প্রিয় । নারী শরীর নিয়ে তার অভিজ্ঞতা এমন পর্যায়ে ঠেকেছে যে, সে যেকোন নারীর চুলের ঘ্রান শুঁকে বলে দিতে পারে চুলে কোন শ্যাম্পু ব্যবহার করা হয়েছে আর গায়ে কোন সাবান । কিন্তু ইদানিং তার আর নারী ভালো লাগে না ।নারী থাকে আর আগের মতো কাছে টানে না । নারী থাকে আর আগের মতো ভাবায় না ।
বাপ্পিকে এখন অন্য কিছু ভাবায় । আজ সকলে বাজারে গিয়ে তার কাছে মনে হলো এই রমাজানে আল্লাহর রহমত সবচেয়ে বেশি পড়েছে কাঁচা বাজারের উপর । সব কিছুর দাম প্রায় ডাবল । বেগুনের উপর আল্লাহর রহমত পড়েছে একটু বেশি। তাই মনে হয় বেগুন বিক্রি হচ্ছে আশি টাকায় । তাই বাপ্পির ভাবনার বিষয়টি এখন কৃষি পন্য । হঠা করে কৃষি পন্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ার কোন কারন বাপ্পি খুঁজে পাচ্ছে না ।তার ধারণা কৃষি মন্ত্রণালয়ে থাকা মন্ত্রী আর বানিজ্য মন্ত্রণালয়ে থাকা মন্ত্রীর মধ্যে কোন রকম যোগাযোগ নেই। এই দুই মন্ত্রীর ব্যর্থতার কারনে বাজারের এই অবস্থা । তাই তার ইচ্ছা করছে এই মুহূর্তে কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী আর বানিজ্য মন্ত্রণালয়ে থাকা মন্ত্রীকে ডেকে এনে কিছু জ্ঞান দিতে । ১. বাঙলাদেশের সকল মানুষকে হাতে কলমে বাধ্যতামূলক ছয় মাসের কৃষি ট্রেনিং কৃষি মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে ২. বাঙলাদেশের সকল ছাত্র ছাত্রীদের জন্য কৃষি শিক্ষা বাধ্যতামূলক ইন্টার মিডিয়েড পর্যন্ত এবং ছয় মাসের মাঠ পর্যায়ে বাধ্যতামূলক প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস নেওয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ এবং যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এই নির্দেশ অমান্য করবে সেই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি আর হেড মাস্টার বা অধক্ষ্যকে ১ বছরের কারাদণ্ড  ৩. কৃষকের উপাদিত পন্য ভোক্তাদের হাতে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত বানিজ্য মন্ত্রণালয়ের কড়া নজরদারি ৪. সিন্ডিকেটের হদিস পাওয়া গেলে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড আর ১০ লাখ টাকা নগদ জরিমানা অনাদায়ে আরও ৪ বছর জেল ৫. হাইব্রিড উপাদনের চাইতে দেশীয় পদ্ধতিতে চাষ আর দেশীয় বীজ সংরক্ষনে কৃষি মন্ত্রণালয়ের কার্যকারী পদক্ষেপ গ্রহন ।


বাপ্পি মনে করছে ইদানিং তার মাথাটা ঠিকঠাক কাজ করছে না । তাই সে আগের মতো মেয়ের পিচে না ছুটে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীকে জ্ঞান দিয়ে বেকার সময় কাটাচ্ছে... আবার মনে হচ্ছে নারী শরীরে মিষ্টি ঘ্রান খোঁজার চাইতে রাষ্ট্রীয় সমস্যা সমাধানে যারা আছে তাদের একটু জ্ঞান দেওয়া অনেক শ্রেয়...

শনিবার, ২১ জুন, ২০১৪

বাপ্পি আর বাপ্পির ভাবনা... / জিপসি রুদ্র

বাপ্পি প্রতিদিন এর মতো আজও খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রাতরাশ সারলো । তারপর ছাতাটা হাতে নিয়ে বের হলো অফিসে যাওয়ার উদ্দেশ্যে । বিল্ডিং থেকে নেমে প্রতিদিনের মতোই গেইটের তালা খুললো । এতো সকালে এই বিল্ডিঙয়ের কেউই ঘুম থেকে উঠে না । তাই তাকেই গেইট খুলে বাইরে যেতে হয় । এই জন্যই সে বাসা ভাড়া নেওয়ার সময় বাড়িওয়ালা থেকে গেইটের একটা চাবি নিয়ে রেখেছে ।
বাসা থেকে রাস্তায় আসতেই প্যাঁচ প্যাঁচ করে বৃষ্টি পরা শুরু করলো । হাল্কা একটু বাতাসও গায়ে লাগছে । তার খুব ভালো লাগছে । এই পরিবেশটা বাপ্পি’র খুবই রোমান্টিক লাগে । এই রকম সময়ে সে সবসময় তার বিশুদ্ধ প্রেমিকার চুমু আশা করে । বাসা থেকে বড় রাস্তার দূরত্ব পাঁচ মিনিটের হাঁটা পথ । ওখানেই তার অফিসের গাড়ি অপেক্ষা করে । তাই তাকে প্রত্যেকদিন বাসা থেকে সকালে  পাঁচ মিনিট হেঁটে যেতে হয় ।
আজ বড় রাস্তায় গিয়েই বাপ্পির মেজাজ গরম হয়ে গেলো । পানি আর পানি । অফিসগামী সবাই ছাতা হাতে দাঁড়িয়ে আছে । একটা গাড়িও রাস্তায় নেই । দু একজন রাস্তায় জাল ফেলে মাছ ধরছে । সে ভাবছে এটা কি শহরের রাস্তা নাকি কোন নদী ?
কোন রকম নিজের মেজাজ’কে ঠাণ্ডা করে গাড়িতে উঠলো । হালিশহর আসার পর বুঝতে পারলো সামনে আর যাওয়া যাবে না । পানি আর পানি । গাড়ি নিয়ে এই পথে আর যাওয়া যাবে না । লাগবে নৌকা ।  
বাপ্পির মেজাজ এবার চরম খারপ । অফিসে যাওয়ার মন-মানসিকতা এখন আর নাই তার । তার ইচ্ছা করছে চট্টগ্রামের মেয়র মঞ্জু আর সিডিএ’র চেয়ারম্যান ছালাম’কে ডেকে এনে কানের পট্টির নিচে টাস টাস করে থাপড়াইতে ।  থাপড়ানো শেষ হইলে সে তাদেরকে কয়েকটা প্রশ্ন করবে । আর কয়েকটা উপদেশ দিবে । সে মনে মনে প্রশ্নও রেডি করে ফেলেছে । প্রশ্ন ১. এটা কি শহর নাকি নদী ? প্রশ্ন ২. এটা কি রাস্তা নাকি নদী? যদি এটি শহর হয় তাহলে এইখানে কোমর পানি ক্যান? যদি এটি রাস্তা হয় তাহলে মানুষ এইখানে জাল দিয়ে মাছ ধরে ক্যান? তোরা দুইজন এইগুলো দেখস কি দেখস না? দেখলে তোরা এখনো ঘরে বইয়া আছস ক্যান? ঘরে বইয়া থাকনের জন্য কি তগোরে নগর পিতা আর চেয়ারম্যান বানাইছি ?

এই পর্যায়ে এসে সে তার বকাবকি থামাবে এবং কিছু উপদেশ দিবে । উপদেশঃ তোরা দুইজন যদি বর্ষার আগে একটা প্লেন কইরা নগরে সমস্থ ড্রেন গুলা পরিষ্কার করে দিতি তাহলে আজকে এতগুলো মানুষের চুদন খাইতে হইতো না । যে এলাকায় ড্রেন ভরাট হয়ে গেছে সেই এলাকায় যদি নয়া ড্রেন খনন করে দিতি তাহলে পানি নিষ্কাশন খুব সহজেই হয়ে যেতো । তখন চুদনের বদলে মানুষ তগোরে পুজা দিতো । এখন যে হারে আজকে তোদের দুজনের চৌদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করছে আমার তো ধারণা এই ভাবে চলতে থাকলে শহরে জনসংখ্যা বাড়তে বেশিদিন সময় লাগবে না ! 

মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০১৪

যানজট নিরসনে বাপ্পি'র পরিকল্পনা.../ জিপসি রুদ্র

বাপ্পি ছেলেটা বিষণ এলোমেলো । নাগরিক জীবনে ছুটে চলা এক ক্লান্তিহীন পথিক । তার দাবী, সে পৃথিবীর সর্বশেষ ভবঘুরে । তার মৃত্যুর পর আর কোন ভবঘুরে'র জন্ম হবে না এই পৃথিবীতে। সে নিজেকে বাঙলাদেশের নাগরিক মনে করে না, মনে করে সে পৃথিবীর নাগরিক। বাঙলাদেশের সেটেলার । সে চায় ভিসা মুক্ত হোক পৃথিবী ।
বাপ্পি রাস্তায় বের হলেই তার মাথা গরম হয়ে যায় । তার ধারনা মাথা শুধু গরম না মাথা আগুন হয়ে যায় ।
রাস্তায় এতো জ্যাম ক্যান ? রাস্তায় জ্যাম থাকবে ক্যান? প্রশ্ন করে নিজেকে সে ।
তার মনের মধ্যে উত্তর আসে , অব্যবস্থাপনা আর সরকার বাহাদুর এর স্বদিচ্ছার অভাবে ।
রাস্তায় ফ্যাপ ফু গাড়ির আওয়াজ তার মাথা আরও গরম করে দিচ্ছে । সে জানে এই অবস্থায় একটা সিগারেট ধরালে তার মাথা একটু ঠাণ্ডা হবে । সিগারেট এর দোকানে গিয়ে মনে হল শালার সরকার যেখানে মনোযোগ দেওয়া দরকার সেখানে মনোযোগ দিচ্ছে না । পড়ে আছে সিগারেট এর দাম নিয়ে !
সিগারেট টানতে টানতে সে সামনে হাঁটছে গাড়ির ভিড়ের মধ্য দিয়ে । তার ইচ্ছা করছে যোগাযোগ মন্ত্রনালয় আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুই মন্ত্রীকে ডেকে এনে দুটা পরামর্শ দিতে । বলতে ইচ্ছা করছে, আয় তোরা দুজন আমার সাথে জ্যাম টেলে গন্তব্যে যায়।
রাষ্ট্রের মানুষ খেতে পায় না আর রাষ্ট্র বেহুদা কামে টাকা ব্যয় করছে দেদারছে ! যানজট নিরসনের জন্য ফ্লাই ওভার নির্মাণ তার কাছে হাস্যকর আর রাষ্ট্রের টাকা অপচয় বলে মনে হয় । যোগাযোগ মন্ত্রী আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে তার মনে হচ্ছে জ্ঞান দেওয়া দরকার ! তার ধারনা বাঙলাদেশের যানজট নিরসনে মাত্র তিন দিনই যথেষ্ট ।দরকার নেই কোন ফ্লাই ওভার নির্মাণের । সে হাটতে হাটতে একটা পরিকল্পনা তৈরি করে যোগাযোগ মন্ত্রী আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর জন্য । এক । ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাঙলাদেশের সকল ফুটপাত দখলমুক্ত করার জন্য নির্দেশ দিবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং এই নির্দেশ অমান্য হলে ওই নির্দিষ্ট থানার ওসি বিদায় । দুই। রাস্তার উপর যেকোন ধরনের ব্যাবসা বানিজ্য গাড়ি পারকিং সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ । তিন । ট্রাফিক পুলিশ হবে আরও কর্মঠ । রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে চাঁদা নেওয়া চলবে না নিলে ওই ট্রাফিক পুলিশ নগদে বিদায় এবং কোন গাড়ি ট্রাফিক সিগন্যাল না মানলে ওই গাড়ির ড্রাইভারের লাইসেন্স নগদে বাতিল । এবং জরিমানা ।
পরক্ষনে মনে হয় , টেনশন তার একার ক্যান ? দেশে কি আর কোন মানুষ নাই ? থাকলে তারা ভাবে না ক্যান ? তার গালি দিতে ইচ্চা করে । কিন্তু বুঝতে পারছে না গালিটা কারে দিবে । সাধারন মানুষকে নাকি যোগাযোগ মন্ত্রী আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে ?

সোমবার, ১৬ জুন, ২০১৪

আমার এই স্বপ্নটাও পূর্ণতা পেলোনা !

মদ খেয়ে সদ্য শুয়েছি ! এর মধ্যেই কলিং বেল টা বেজে উঠলো ! খুব বিরক্তি নিয়ে বিছনা থেকে উঠে দরজা খুলে আমিতো পুরাই অবাক ! আরে এ তো সেই মেয়েটি ! যে মেয়েটি'কে আমার অসম্ভব ভালো লাগে ! ভীষণ ভালো লাগে ! এতো ভালো লাগে যে, সে আমার পাশ দিয়ে হেঁটে গেলে আমার ভেতর কেমন জানি একটা ভালো লাগা তৈরি হয় ! আমি যেন কেমন হয়ে যায় ! পুলকিত হই শিহরিত হই ! ভেতরে কেমন জানি একটা আড়ষ্টতা তৈরি হয় ! আমি বুঝতে পারি মেয়েটিকে কত্তো ভালোবাসি ! কিন্তু এতো রাতে এই মেয়েটি আমার দরজায় ? 
কি মিস্টার ! অবাক হলেন ?
আমার কোন উত্তর নেই ! ইশারায় বললাম ভেতরে আসো ! 
আজকে তো বিশুধবার , তোমার মদ্যদিবস ! তোমাকে দেখেই তো বুঝা যাচ্ছে গিলেছো অনেক !
তা খেয়েছি একটু...
সে যাই হোক , লোকমুখে শুনছি তুমি নাকি আমাকে ভালোবাসো ? আমাকে দেখলে নাকি তোমার ভেতরে কেমন জানি একটা আড়ষ্টতা তৈরি হয় ? তুমি নাকি পুলকিত হও, শিহরিত হও? আমি নাকি তোমার প্রিয় আবৃত্তি শিল্পী ? 
তুমি কি তার সত্যতা  জানতে এসেছো ? 
যদি বলি , হু
তাহলে আমি বলতে পারি , যা শুনেছো মিথ্যে শুনো নি !
তুমি কি জানো তুমি ছেলেটা কি রকম ? তোমার নামে কতো বাজে বাজে কথা এ পাড়ায় প্রতিষ্ঠিত ? 
আমি আমার সম্পর্কে তোমাদের সকল অপবাদ বা আরো অনেক মুখরোচক কথা গায়ে মেখে নিয়ে তোমাকে একটা কথা বলতে পারি, আমি কিন্তু ভালোবাসোতে জানি...
মেয়েটি তার চোখের চশমা’টা আঙ্গুল দিয়ে টেলে আমার চোখের দিকে তাকিয়ে রয়েছে আমি ফ্যানের বাতাসে তার চুল উড়া দেখছি ! 
বললাম, আমি কি তোমার হাতটা ধরতে পারি ! আর একটা চুমু...
মেয়েটি হেঁসে বলল, পাগল একটা...! 
আমি মেয়েটির হাতটি ধরার জন্য আমার হাতটা বাড়িয়েছি ! ঠিক এই সময় কে যেন আমার গাঁড়ে কামড় বসিয়েছে । চোখ খুলে দেখি গলায় একটা লাল পিঁপড়া কামড়াচ্ছে ! 
তাকে নিয়ে আমার এই স্বপ্নটাও পূর্ণতা পেলোনা ! আসলে অপূর্ণতায় কি ভালোবাসা ? সে যাই হোক, বেঁচে থাকুক আমার ভালোবাসা ! ভালো থাকুক তার জন্য... 

জিপসি রুদ্র
২৩/০৫/২০১৪