বাপ্পি প্রতিদিন এর মতো আজও খুব সকালে ঘুম থেকে
উঠে প্রাতরাশ সারলো । তারপর ছাতাটা হাতে নিয়ে বের হলো অফিসে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ।
বিল্ডিং থেকে নেমে প্রতিদিনের মতোই গেইটের তালা খুললো । এতো সকালে এই বিল্ডিঙয়ের
কেউই ঘুম থেকে উঠে না । তাই তাকেই গেইট খুলে বাইরে যেতে হয় । এই জন্যই সে বাসা
ভাড়া নেওয়ার সময় বাড়িওয়ালা থেকে গেইটের একটা চাবি নিয়ে রেখেছে ।
বাসা থেকে রাস্তায় আসতেই প্যাঁচ প্যাঁচ করে
বৃষ্টি পরা শুরু করলো । হাল্কা একটু বাতাসও গায়ে লাগছে । তার খুব ভালো লাগছে । এই
পরিবেশটা বাপ্পি’র খুবই রোমান্টিক লাগে । এই রকম সময়ে সে সবসময় তার বিশুদ্ধ
প্রেমিকার চুমু আশা করে । বাসা থেকে বড় রাস্তার দূরত্ব পাঁচ মিনিটের হাঁটা পথ ।
ওখানেই তার অফিসের গাড়ি অপেক্ষা করে । তাই তাকে প্রত্যেকদিন বাসা থেকে সকালে পাঁচ মিনিট হেঁটে যেতে হয় ।
আজ বড় রাস্তায় গিয়েই বাপ্পির মেজাজ গরম হয়ে গেলো
। পানি আর পানি । অফিসগামী সবাই ছাতা হাতে দাঁড়িয়ে আছে । একটা গাড়িও রাস্তায় নেই ।
দু একজন রাস্তায় জাল ফেলে মাছ ধরছে । সে ভাবছে এটা কি শহরের রাস্তা নাকি কোন নদী ?
কোন রকম নিজের মেজাজ’কে ঠাণ্ডা করে গাড়িতে উঠলো ।
হালিশহর আসার পর বুঝতে পারলো সামনে আর যাওয়া যাবে না । পানি আর পানি । গাড়ি নিয়ে
এই পথে আর যাওয়া
যাবে না । লাগবে নৌকা ।
বাপ্পির মেজাজ এবার চরম খারপ । অফিসে যাওয়ার
মন-মানসিকতা এখন আর নাই তার । তার ইচ্ছা করছে চট্টগ্রামের মেয়র মঞ্জু আর সিডিএ’র
চেয়ারম্যান ছালাম’কে ডেকে এনে কানের পট্টির নিচে টাস টাস করে থাপড়াইতে । থাপড়ানো শেষ হইলে সে তাদেরকে কয়েকটা প্রশ্ন
করবে । আর কয়েকটা উপদেশ দিবে । সে মনে মনে প্রশ্নও রেডি করে ফেলেছে । প্রশ্ন ১.
এটা কি শহর নাকি নদী ? প্রশ্ন ২. এটা কি রাস্তা নাকি নদী? যদি এটি শহর হয় তাহলে
এইখানে কোমর পানি ক্যান? যদি এটি রাস্তা হয় তাহলে মানুষ এইখানে জাল দিয়ে মাছ ধরে
ক্যান? তোরা দুইজন এইগুলো দেখস কি দেখস না? দেখলে তোরা এখনো ঘরে বইয়া আছস ক্যান?
ঘরে বইয়া থাকনের জন্য কি তগোরে নগর পিতা আর চেয়ারম্যান বানাইছি ?
এই পর্যায়ে এসে সে তার বকাবকি থামাবে এবং কিছু
উপদেশ দিবে । উপদেশঃ তোরা দুইজন যদি বর্ষার আগে একটা প্লেন কইরা নগরের সমস্থ
ড্রেন গুলা পরিষ্কার করে দিতি তাহলে আজকে এতগুলো মানুষের চুদন খাইতে হইতো না । যে
এলাকায় ড্রেন ভরাট হয়ে গেছে সেই এলাকায় যদি নয়া ড্রেন খনন করে দিতি তাহলে পানি
নিষ্কাশন খুব সহজেই হয়ে যেতো । তখন চুদনের বদলে মানুষ তগোরে
পুজা দিতো । এখন যে হারে আজকে তোদের দুজনের চৌদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করছে আমার তো
ধারণা এই ভাবে চলতে থাকলে শহরে জনসংখ্যা বাড়তে বেশিদিন সময় লাগবে না !