১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি শেখ সাহেব যে আশা এবং আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ছাত্রলীগ
গঠন করেছিলেন তার থেকে বাঙলাদেশ ছাত্রলীগ এখন যোজন যোজন মাইল দূরে সরে এসেছে।ছাত্রলীগের
একটা গৌরব উজ্জ্বল সময় ছিল। বাঙলাদেশের অতীত ইতিহাস খতিয়েদেখলেযেআন্দোলন
সংগ্রামের হদিস পাওয়া যায় তার সাথে ছাত্রলীগের একটা প্রত্যক্ষ অবদানছিল। তার
মধ্যে ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন ৬৯’র ১১ দফা আন্দোলন সর্বপরি ৭১’এর স্বাধীনতা
যুদ্ধে ছাত্রলীগের অংশগ্রহন বীরোচিত।
এই গৌরব উজ্জ্বল অবদানের জন্য দেশের সাধারন মানুষের মনে ছাত্রলীগ এর
জন্য একটা জায়াগা তৈ্রি হয়। মানুষ ছাত্রলীগকে ভালবাসতে শুরু করে। দেশের সচেতন
ছাত্রসমাজ তাদের আপন সংগঠন হিসাবে ছাত্রলীগকে গ্রহন করে। বাঙলাদেশের জাতীয়
রাজনীতিতে মানসম্মত প্রচুর নেতার যোগান এসেছে ছাত্রলীগ থেকে। এককথায় বাঙলাদেশের
ছাত্ররাজনীতিতে মেধা ও বুদ্ধিভিত্তিক রাজনীতির একমাত্র আদর্শ ছিল বাঙলাদেশ ছাত্রলীগ।
স্বাধীনতা পূর্ব ছাত্রলীগ বাঙলাদেশে আশীর্বাদ কিন্তু স্বাধীনতা উত্তর
ছাত্রলীগ বাঙলাদেশে অবিশাপ। স্বাধীনতা উত্তর দক্ষিন এশিয়ার সর্ব বৃহৎ এই ছাত্র
সংগঠনটি নানা রকম কৃতকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়ে। এমন কোন ঘৃণ্য কাজ নেই যা ছাত্রলীগ করেনি।
যত্রতত্র চাঁদাবাজি, গুম, ধর্ষণ, মানুষ খুন, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে সন্ত্রাসী
কর্মকাণ্ড সবই এই ছাত্র সংগঠনটি নির্দিধায় চালিয়ে যাচ্ছে।শিক্ষা প্রতিষ্টানে
গণতান্ত্রিক রাজনীতির যে ধারাবাহিকতা ছিল তা আজ বিলীন হয়েছে একমাত্র ছাত্রলীগের
কারনে। কারনে অকারনে শিক্ষকের সাথে বেয়াদবি সাধারণ ছাত্র ছাত্রীদের ভীতি প্রদর্শন
ছাত্রলীগকে এখন জন বিচ্ছিন্ন ছাত্র সংগঠনে পরিনত করেছে। ছাত্রলীগ বললে আগে মানুষ
যেখানে ভালবাসার দৃষ্টিতে মুল্যায়ন করতো এখন সেখানে ঘৃণার দৃষ্টিতে মুল্যায়ন করে।
সাধারণ মানুষের মনে ছাত্রলীগ এখন একটি ত্রাস, হুমকি ও ক্ষতিকর সংগঠন। নৈতিক ভাবে সম্পূর্ণ
দেউলিয়া একটি ছাত্র সংগঠনের নাম ছাত্রলীগ।
একটা সময় ছাত্রলীগ নেতাদের বক্তৃতা শুনে আমার মনে হত এদের কবিতা লেখার
দরকার কি এদের এক একেটা বক্তৃতাই তো এক একেটা কবিতা। কিন্তু এখন মনে হয় কুকুরের
ঘেউ ঘেউ। যেখানে আশার কোন বানী নেই আছে শুধু চামচামি আর গোলামি ।
সম্প্রতি ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড দেখে আমি শিয়রে উঠেছি । থমকে গিয়েছি।
আশাহত হয়েছি। নিজের মধ্যে নিজে বিলাপ করে বলেছি ছাত্রলীগ তোর আল্লাহর দোহাই লাগে
এইবার একটু থাম। তোদের জন্মের সাথে যে মানুষটির নাম জড়িয়ে আছে ওই মানুষটি এই
স্বাধীন বাঙলার স্থপতি। ওই মানুষটির নাম শুনলে মানুষ এখনও আবেগ-আপ্লুত হয়। বেঁচে
থাকার সাহস পাই। কিন্তু তোদের এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড না থামালে তোদের সাথে সাথে
এই মহান পিতাকেও মানুষ ঘৃণা করতে শুরু করবে। তোদের আল্লাহর দোহাই লাগে স্বাধীন
বাঙলায় তোরা এই মহান পিতাকে অবমুল্যায়নের সুযোগ দিস না। তোরা তোদের আগের গৌরব
উজ্জ্বল ইতিহাস মনে করে এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিহার কর। মনে রাখিস দেশীয়
রাজনীতিতে এখনও ছাত্রলীগের প্রয়োজন আছে। সেটি যেন সুস্থ সুন্দর ও মননশীল রাজনীতি
হয়।
নিসর্গ
২৩,কে,বি প্লাজা
চকবাজার, চট্টগ্রাম
০১৭৩১৭৪৫৪১১ ০১৬৭৩০১১১৮০